Wellcome to National Portal

কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের তথ্য বাতায়নে স্বাগতম।কারাগারে আটক বন্দির অসুস্থতার কথা বলে বিকাশ, রকেট, নগদ বা যে কোন ব্যাংকে অর্থ গ্রহণ করা হয় না।সরকারী নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করা হয়। কেউ এ ধরনের কারাগারের পরিচয় দিয়ে অর্থ চাইলে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীকে বা অত্র দপ্তরে যোগাযোগ করার জন্য বলা যাচ্ছে।

মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ঘটনাপুঞ্জ

লোক পরস্পরায় চলে আসছে ‘‘লাল দালান’’ কথাটা৷ চারপাশ ঘিরে ভারী উঁচু দেয়াল, মধ্যে লোহার গারদে আটক মানব সন্তান৷ তার দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা-বেদনা আমাদের গতিময় স্বাভাবিক জীবনকে স্পর্শ করে না৷ বন্ধ কুঠুরীতে আত্মদহনে জ্বলে-পুড়ে কেউ হয় খাঁটি সোনা, আঁধার মানিক, আবার কেউবা ডুবে যায় অন্ধকার অতলে৷ প্রশ্ন কি জাগেনা একই জগতের মধ্যে চার দেয়ালে ঘেরা রহস্যময় আলাদা জগৎ কিভাবে তৈরী হল? উল্লেখ্য, একদা এ জগতের সকল অবকাঠামো লাল রংয়ে মোড়া ছিল৷কারাগার বা জেলখানার উৎপত্তির সঠিক নির্ঘন্ট পাওয়া খুবই দুরূহ ৷ ইতিহাসবেত্তাদের কাছে এ বিষয়টি এখনো উন্মোচনের অপেক্ষায়৷ কারা ব্যবস্থাপনার অতীত খুঁজে যেটুকু জানা যায়, ১৫৫২ সালে লন্ডনে একটি প্রাসাদ St Briget well প্রথম কারাগার হিসাবে চিহ্নিত হয়৷ রাষ্ট্রীয়, সামাজিক বিভিন্ন দিক থেকে কারাগারের উপযোগিতা উপলদ্ধি করে ১৫৯৭ সালে বৃটিশ সরকার এ ধরণের আরো কয়েকটি কারাগার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়৷ ১৬০০ সালে লন্ডনের প্রত্যেক কাউন্টিতে কারাগার তৈরীর নির্দেশ দেয়া হয়৷ প্রাথমিক পর্যায়ে এ কারাগার গুলোতে বন্দীদের দৈহিক পরিশ্রম ও নিয়মানুবর্তিতার দিকে দৃষ্টি দেয়া হত৷ তবে, অষ্টাদশ শতাদ্বীন্তে ইংল্যান্ডে Gaol বা জেলখানার ধারণা যথেষ্ট গুরুত্ব লাভ করে৷ কারণ সে সময়ে এ ধরণের Gaol মৃত্যু কুঠুরী হিসাবে চিহ্নিত হচ্ছিল৷ প্রায় আলো বাতাসহীন ঘরে নারী পুরুষ সবাইকে একত্রে রাখা হত৷ ফলে অনেক মহিলা নিগৃহিত হত৷ এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ সোচচার হয়ে উঠলে এ ব্যবস্থার আশু সংস্কার করা নহ৷ সে সময়ে কারা সংস্কারে দারুণ অবদান ছিল জন হাওয়ার্ড নামের একজন সামাজিক ব্যক্তিত্বের৷ তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর (১৭৭৩ খ্রিঃ-১৭৯০খ্রিঃ) কারাগার সমূহ পরিদর্শন করে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অনেক লেখা-লেখির পর কারা ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়৷ ১৮১২ খ্রিঃ ইংল্যান্ডে প্রথম জাতীয় কারাগার Milk Bank প্রতিষ্ঠিত হয়৷ পঁচিশ লাখ পাউন্ড ব্যয়ে নির্মিত Milk Bank-এ তিন কিলোমিটার লম্বা বারান্দাসহ কয়েকশত প্রকোষ্ঠ ছিল, যার কাজ শুরু হয়েছিল ১৮১২ সালে এবং শেষ হয় ১৮২১ সালে৷যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতা লাভের পর ১৭৯০ সালে ফিলাডেলফিয়া অঙ্গরাজ্যে Wal Nut St. Jail প্রথম রাষ্ট্রীয় কারাগার হিসেবে স্থাপিত হয় ৷ নিউইয়র্ক সিটিতে ১৭৯৬ সালে এবং মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে ১৮২৯ সালে কারাগার স্থাপিত হয় ৷ পরবর্তীতে মেরিল্যান্ডর কারাগারে বন্দীদের জন্য স্কুল সম্পৃক্ত করা হয়৷ ১৮৩২ সালে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে স্থাপিত কারাগারে প্রথমবারের মত পুরস্কার পদ্ধতি হিসাবে বন্দীদের ভাল আচরণের জন্য মাসে ০২(দুই) দিন জেল মওকুফ ও খারাপ আচরণের জন্য কয়েক ধরণের শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হয়৷ ১৮৩১ সালে ভারমন্ট কারাগারে স্বজনদের সাথে পএ যোগাযোগের সুযোগ দেয়া হয় ৷গবেষণার অভাবে দূর অতীতে আমাদের উপমহাদেশে কারাগার ও ব্যবস্থাপনার সুনিদির্ষ্ট তথ্যের যোগান সীমিত হয়ে আছে ৷ জানা যায়, ভারতের রাজা অশোকের সময়ে মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দীকে তিন দিন একটি কুঠুরীতে বেঁধে রাখা হতো ৷ এ ধরণের কয়েদ খানার অস্তিত্ব জমিদারী ব্যবস্থাপনায় ছিল ৷ উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আগমনের পর মূলতঃ কারা ব্যবস্থাপনা নতুন আঙ্গিকে প্রকাশ পেতে থাকে ৷ ১৮১৮ সালে রাজবন্দীদের আটকার্থে বেঙ্গল বিধি জারী করা হয় ৷বর্তমানের বাংলাদেশের ঢাকা, রাজশাহী, যশোর, কুমিল্লা এবং কয়েকটি জেলা ও মহকুমা কারাগার উক্ত সময়ে নির্মিত হয়৷ তবে ১৭৮৮ সালে একটি ক্রিমিনাল ওয়ার্ড নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকা কারাগারের কাজ শুরু হয় ৷ ১৮৬৪ সালে সকল কারাগার পরিচালনা ব্যবস্থাপনার মধ্যে এক সমন্বিত কার্যক্রম প্রতিষ্ঠিত হয় Code of rules চালুর মাধ্যমে৷ ১৯২৭ সালের এপ্রিলে কিশোরদের জন্য বাকুড়ায়(ভারত) প্রথম Borstal Institute স্থাপিত হয়৷ ১৯২৯ সালে অবিভক্ত বাংলায় কোলকাতার প্রেসিডেন্সি, আলীপুর, মেদিনিপুর, ঢাকা ও রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে ঘোষিত হয়৷


 ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর ০৪ টি কেন্দ্রীয় কারাগার, ১৩টি জেলা কারাগার এবং ৪৩ টি উপ-কারাগার নিয়ে বাংলাদেশ জেল (বি ডি জে) এর যাত্রা শুরু ৷ পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে বন্দী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে উপ-কারাগার গুলিকে জেলা কারাগারে রূপান্তর করা হয় ৷ বর্তমানে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৫৫টি জেলা কারাগার নিয়ে বাংলাদেশ জেল কাজ করে চলছে ৷